
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ভবিষ্যতে মেলার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এই মেলার প্রস্তুতি সারা বছর ধরে চলবে, যেখানে দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তরুণ ও প্রবীণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হবে। এখান থেকে সেরা উদ্যোক্তাদের বাছাই করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে, এবং তাদের যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করবে সরকার।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, দেশের তরুণদের উদ্ভাবনী শক্তি ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বব্যাপী তাদের প্রভাব ছড়িয়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, "তরুণরা আমাদের পথপ্রদর্শক। একদিন আন্তর্জাতিক তরুণরা বাংলাদেশে এসে এখানকার তরুণদের কাজ দেখতে এবং শিখতে আসবে। এমনকি যৌথ উদ্যোগেও তারা এগিয়ে আসবে।"
তিনি আরও জানান, মেলায় ২৫ বছরের কম বয়সী উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা একটি অংশ থাকবে, যেখানে তারা নিজেদের উদ্ভাবনী ধারণা ও উদ্যোগ প্রদর্শন করতে পারবে। এই আয়োজন দেশের তরুণ প্রজন্মকে রপ্তানি বাণিজ্যে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করবে।
এবারের বাণিজ্য মেলাটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে প্রথমবারের মতো স্টল ও প্যাভিলিয়ন স্পেস অনলাইনে বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলায় ই-টিকিটিংয়ের ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে, যা ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য মেলায় প্রবেশ আরও সহজ করবে। দর্শনার্থীদের যাতায়াতে সুবিধার্থে বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিস ছাড়াও বিশেষ ছাড়ে উবার পরিষেবা চালু করা হয়েছে।
মেলায় তরুণ সমাজের আত্মত্যাগ ও দেশের ইতিহাসকে সম্মান জানাতে তৈরি করা হয়েছে "জুলাই চত্বর" ও "ছত্রিশ চত্বর"। পাশাপাশি, তরুণ উদ্যোক্তাদের রপ্তানি বাণিজ্যে আগ্রহী করে তুলতে "ইউথ প্যাভিলিয়ন" স্থাপন করা হয়েছে।
এবারের মেলার লে-আউট প্ল্যান অনুযায়ী ৩৬১টি প্যাভিলিয়ন, স্টল, এবং রেস্টুরেন্ট স্থানীয় উৎপাদক ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ দেশি-বিদেশি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে সাতটি দেশের ১১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। মাসব্যাপী এই মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলার সময়সীমা রাত ১০টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, "তরুণদের মেধা ও উদ্যোগ জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করাই আমাদের দায়িত্ব।" তিনি আশা প্রকাশ করেন, নতুন উদ্যোগগুলো ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতকে সমৃদ্ধ করবে এবং তরুণদের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য একটি উজ্জ্বল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।
repoter