
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল শনিবার থেকে পর্যটকদের জন্য সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণ বন্ধ করা হচ্ছে। এ নিষেধাজ্ঞা চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বহাল থাকবে, ফলে নয় মাসের জন্য পর্যটক প্রবেশ বন্ধ থাকবে দ্বীপে।
সাধারণত প্রতি বছর ১ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় মাস সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের প্রবেশে সরকারি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকে। তবে এবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা আরও তিন মাস বাড়িয়ে ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে ১ এপ্রিলের পরিবর্তে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে এবং ৩০ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তা বহাল থাকবে।
এ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং পর্যটকদের জন্য অন্তত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ পর্যন্ত দ্বীপটি খোলা রাখার দাবি জানিয়েছেন। সাধারণত প্রতি বছর ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পর্যটকদের আনাগোনা থাকে, কিন্তু এবার ভ্রমণের শেষ সময়সীমা ৩১ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।
সেন্টমার্টিন হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি এম এ আবদুর রহিম জিহাদী বলেছেন, অতীতে সেন্টমার্টিনে এ ধরনের সংকট দেখা যায়নি। পর্যটন নিষিদ্ধ হলে দ্বীপের বাসিন্দারা চরম সংকটে পড়বেন, কারণ তাদের জীবিকা এই পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। তিনি মানবিক দিক বিবেচনা করে অন্তত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটি উন্মুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছেন।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, দ্বীপের প্রায় সাড়ে ১০ হাজার বাসিন্দার জীবিকা পর্যটনের সঙ্গে জড়িত। পর্যটন মৌসুমে আয় করা অর্থ দিয়েই তারা সারা বছর সংসার চালান। যদি জাহাজ চলাচল ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চালু রাখা হতো, তবে স্থানীয় বাসিন্দারা কিছুটা সুবিধা পেতেন।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসাইন জানান, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ চলবে, তবে এরপর আর কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না। সরকার যদি পরবর্তীতে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা পরিবর্তন করে, তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে পর্যটকদের ভ্রমণের সময়সীমা কমানোর পাশাপাশি বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। গত নভেম্বর থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ করা হয়। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রতিদিন মাত্র ২ হাজার পর্যটকের দ্বীপে প্রবেশ এবং রাত্রিযাপনের অনুমতি ছিল। তবে ফেব্রুয়ারি থেকে সম্পূর্ণভাবে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সরকারি এই সিদ্ধান্তে সেন্টমার্টিনের পর্যটন ব্যবসায়ীরা এবং স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দ্বীপের ব্যবসায়ী ও কর্মসংস্থানের সঙ্গে জড়িত মানুষরা সরকারের কাছে পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন, যাতে অন্তত ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হয়।
repoter