
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
৬১ বছর পর নারীদের অংশগ্রহণে একটি ঐতিহাসিক মহাকাশ অভিযানের সাক্ষী হলো বিশ্ব। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় টেক্সাসের পশ্চিমাঞ্চল থেকে জেফ বেজোসের মহাকাশযাত্রা সংস্থা ব্লু অরিজিনের ‘দ্য নিউ শেপার্ড’ রকেট উড্ডয়ন করে, যেখানে ছয় নারী যাত্রী মহাকাশ ভ্রমণে অংশ নেন। মাত্র ১১ মিনিট স্থায়ী এই স্বল্পস্থায়ী অভিযানে তারা পৃথিবীর কক্ষপথের নিকটবর্তী স্থান পর্যন্ত পৌঁছান এবং সফলভাবে ফিরে আসেন।
এই মহাকাশযাত্রায় মার্কিন পপ তারকা কেটি পেরি ছাড়াও ছিলেন ব্লু অরিজিনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের বাগদত্তা লরেন সানচেজ, সিবিএসের বিখ্যাত উপস্থাপক গেইল কিং, রকেটবিজ্ঞানী আইশা বোয়ে, মানবাধিকারকর্মী আমান্ডা নুয়েন এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক কেরিয়ান ফ্লিন। একসঙ্গে ছয় নারী মহাকাশে পাড়ি দেওয়ায় এটি নারীদের জন্য একটি নতুন মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
নিউ শেপার্ড রকেটটি পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছায়। সেখানে তিন মিনিট অবস্থানের পর ধাপে ধাপে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসে। যাত্রার শেষে রকেটটি প্যারাসুটের মাধ্যমে পশ্চিম টেক্সাসের মরুভূমিতে নিরাপদে অবতরণ করে।
এনএস-৩১ নামের এই মিশনটি মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। এর আগে ১৯৬৩ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের নারী নভোচারী ভ্যালেন্তিনা তেরেশকোভা এককভাবে মহাকাশে ৭০ ঘণ্টা কাটিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন। তার দীর্ঘ বিরতির পর এবারই প্রথম একসঙ্গে ছয় নারী মহাকাশ অভিযানে অংশ নিলেন।
মহাকাশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে কেটি পেরি বলেন, “এটি ছিল সর্বোচ্চ উচ্চতার অভিজ্ঞতা। এটি ছিল অজানার কাছে আত্মসমর্পণের মতো এক অনুভূতি।” তিনি জানান, এই অভিজ্ঞতা তার জীবনের অন্যতম সেরা এবং স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকবে।
মহাকাশ গবেষণায় নারীদের অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্বের ক্ষেত্রে এটি একটি নতুন অধ্যায় খুলে দিয়েছে বলে মত দিয়েছেন মহাকাশ বিশেষজ্ঞরা। এই অভিযানের মাধ্যমে শুধু প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়, বরং বৈশ্বিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জগতে নারীর অবস্থান আরও সুদৃঢ় হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই সংক্ষিপ্ত হলেও শক্তিশালী অভিযানের মধ্য দিয়ে ব্লু অরিজিন আবারও প্রমাণ করেছে যে বাণিজ্যিক মহাকাশ ভ্রমণ কেবল বিজ্ঞানের বিষয় নয়, এটি এক ধরণের বৈশ্বিক প্রতীকও হয়ে উঠতে পারে – বিশেষ করে যখন তা একটি ঐতিহাসিক বিভাজনকে অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যায়।
repoter