
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের জন্য ২০২৫ সালে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হিসেবে মুদ্রাস্ফীতিকে চিহ্নিত করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)। সংস্থাটির সর্বশেষ বৈশ্বিক ঝুঁকি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টির জন্য উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। একই সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বেকারত্ব ও দূষণও অর্থনীতির ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে।
বুধবার (১৬ জানুয়ারি) প্রকাশিত ডব্লিউইএফের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতির বড় ঝুঁকিগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশগত দূষণ শীর্ষে রয়েছে। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে এই চ্যালেঞ্জগুলো আরো প্রকট। বিশ্বের যে ১০টি দেশ দূষণকে শীর্ষ তিন ঝুঁকির একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের মূল্যস্ফীতি উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। ২০২২ সালে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে বেড়ে ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশে দাঁড়ায়। ২০২৪ সালে তা আরও বৃদ্ধি পেয়ে ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশে পৌঁছেছে। মুদ্রাস্ফীতির এই ঊর্ধ্বগতি দেশটির সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
ডব্লিউইএফের বিশ্লেষণে বেকারত্বকেও বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিনিয়োগ ও ব্যবসার প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পাওয়ার কারণে দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যা ও তাপপ্রবাহের প্রকোপ বেড়েছে। এই দুর্যোগগুলো কৃষি, অবকাঠামো ও মানুষের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত করছে। একই সঙ্গে দূষণ সমস্যাটি দেশের জনস্বাস্থ্য এবং উৎপাদনশীলতার ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের মতো দেশগুলোতে জনসংখ্যার ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি হওয়ায় পরিবেশগত দূষণের প্রভাব তুলনামূলকভাবে মারাত্মক। এসব দেশে কার্যকর নীতিমালা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ডব্লিউইএফের মতে, এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনে দীর্ঘমেয়াদি কৌশল প্রয়োজন। একই সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশগত দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে টেকসই উন্নয়ন নীতিমালা বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডব্লিউইএফের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
repoter