
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
২০২৪ সালে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৬ হাজার ৯৭৪টি দুর্ঘটনায় ৯ হাজার ২৩৭ জন নিহত এবং ১৩ হাজার ১৯০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সড়কপথে ৬ হাজার ৩৫৯টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮ হাজার ৫৪৩ জন এবং আহত হয়েছেন ১২ হাজার ৬০৮ জন।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত ‘২০২৪ সালের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য উপস্থাপন করেন সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকারের পরিবর্তন হলেও দেশের পরিবহন ব্যবস্থার কাঠামোগত কোনো উন্নয়ন হয়নি। সড়কে ফিটনেসহীন যানবাহন চলাচল, ট্রাফিক আইনের সঠিক প্রয়োগের অভাব এবং চাঁদাবাজি ও অনিয়ম এখনো অব্যাহত।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় ২০২৪ সালে বিভিন্ন পেশা ও বয়সের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১৬৮ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১ হাজার ৯৫২ জন চালক, ১ হাজার ৮৭৯ জন পথচারী, ৬২২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭৫৫ জন শিক্ষার্থী, ১২৬ জন শিক্ষক, ১ হাজার ২০৬ জন নারী, ৬৫৮ জন শিশু, ৪৮ জন সাংবাদিক, ১৭ জন চিকিৎসক, ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, একজন চিত্রনায়ক, ৬ জন আইনজীবী, ১২ জন প্রকৌশলী এবং ২১৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ছিলেন।
সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, "পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো দূর করা অত্যন্ত জরুরি। সভা-সমাবেশ বা বিবৃতি দিয়ে এ সংকট সমাধান সম্ভব নয়। দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে বিআরটিএ-এর রাজস্ব আদায়মুখী ভূমিকা, ট্রাফিক বিভাগের জরিমানা আদায়ের প্রতিযোগিতা, চাঁদাবাজি এবং আইন প্রয়োগে গাফিলতির বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের সড়কে দুর্ঘটনার যাবতীয় উপাদান ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। যতদিন না কাঠামোগত উন্নয়ন এবং কার্যকর আইন বাস্তবায়ন হবে, ততদিন দুর্ঘটনা রোধ সম্ভব নয়।"
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সমাজ উন্নয়ন কর্মী আবদুল্লাহ আল-জহির স্বপন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক, যুগ্ম মহাসচিব মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল এবং দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্য মো. জিয়াউল হক চৌধুরী।
দুর্ঘটনা পর্যালোচনা করে যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানিয়েছে, সড়কে দুর্ঘটনা রোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রতিটি দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
repoter